![]() |
| source: adobe stock |
ভারত এক অতি প্রাচীন দেশ এবং তার সভ্যতাও অতি প্রাচীন । যুগ যুগ ধরে সে সব , বিদেশি জাতি ও উপজাতি ভারতে প্রবেশ করে ভারতের জনস্রোতে মিশে গেছে তা ভাবলেও অবাক হতে হয় । এই কারণেই ইংরেজ ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ ভারতবর্ষকে নৃতাত্ত্বিক যাদুঘর ' ( ' Ethnological Museum ' ) বলে অভিহিত করেছেন ।
দেহের গঠন ও ভাষার বিচারে নৃতত্ত্ববিদ পণ্ডিতেরা প্রাচীন ভারতের অধিবাসীদের কয়েকটি প্রধান জাতিতে ভাগ করেছেন , যথা : ( ১ ) আর্য , ( ২ ) দ্রাবিড় , ( ৩ ) নেগ্রিটো এবং ( ৪ ) মোঙ্গলীয় জাতি
( ১ ) নর্ডিক বা আর্য জাতি :
আর্য জাতির মানুষ ছিল দীর্ঘাকৃতি , গৌরবণ ও উন্নত জনক । এদের ভাষা থেকে সংস্কৃত ভাষার সৃষ্টি হয়েছে । এই জতি ভারতে জনক হয় । উত্তর ভারতের পাঞ্জাব এবং সিন্দু ও গাঙ্গেয় উপত্যকার মানুষরা সাধারণত আর্যজাতি বংশধর ছিল ।
( ২ ) দ্রাবিড় জাতি :
আর্যদের তুলনায় খর্বাকৃতি ও কৃস্নোকার দ্রাবিড়রা ছিল প্রাচীন ভারতের অপর উল্লেখযােগ্য জাতিগােষ্ঠী । দেহের গঠন , রং , ভাষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে এরা আর্যদের থেকে একেবারে আলাদা । দক্ষিণ ভারতের অধিবাসীরা দ্রাবিড় জাতির বংশধর । এদের বর্তমান ভাষা হল তামিল , তেলেগু , মালয়ালম ও কানাড়ী ।
( ৩ ) নেগ্রিটো জাতি :
প্রস্তর যুগে ভারতে নেগ্রিটো জাতির বসবাসের নিদর্শন পাওয়া যায় । এরা ছিল কৃষ্ণুবর্ণ , খর্বনাশা ও খর্বকায় । আফ্রিকার নিগ্রো জাতি থেকে উদ্ভুত নেগ্রিড মানুষের অস্তিত্ব ভারতে আজ প্রায় নিশ্চিহ্ন । এদের এক সামান্য ভাগ আন্দামান - নিকবর দ্বীপপুঞ্জ , কোচিন , ত্রিবাঙ্কুর ও বিহারের রাজমহল পার্বত্য অঞ্চলে এখনও বসবাস করে ।
( ৪ ) মঙ্গোলীয় জাতি :
প্রাচীন ভারতীয় জনগােষ্ঠীর আর - এক অংশ ছিল মঙ্গোলীয় জাতি । এই জাতির মানুষের গায়ের রঙ হলুদ , চোখ ও নাক চ্যাপ্টা । সিকিম , ভুটান , নেপাল প্রভৃতি অঞ্চলে এই জাতির মানুষদের বসবাস করতে দেখা যায় ।
প্রাচীন ভারতের এইসব আদিম জনজাতিগােষ্ঠী ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিদেশি জাতি ভারতে প্রবেশ করে ভারতীয় জনসমাজে এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে ( যেমন , বাঙালিরা নর্ডিক ও নেগ্রিটো জাতির এবং রাজপুতরা মধ্য এশিয়া থেকে আগত হুন ও আর্য জাতির সংমিশ্রণে ) বিভিন্ন জাতির মধ্যে মিলন ও মিশ্রণের ফলে ভারতবর্ষ মহামানবের এক মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ।

0 Comments