মেহেরগড় সভ্যতা

source: adobe stock


  

১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে আবিষ্কৃত নতুন প্রস্তর যুগের সমসাময়িক সময়ের মেহেরগড় সভ্যতা ছিল বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির অন্যতম । আজ থেকে প্রায় ৮,৫০০ বছর আগে মেহেরগড় ও তার সন্নিহিত অঞ্চলে ভারতীয় সভ্যতার বিকাশের যে সূত্রপাত হয় , তা প্রথমে হরপ্পা সভ্যতা ও পরে ঋক - বৈদিক সভ্যতার বিকাশের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণতা লাভ করে । তাই বিভিন্ন ঐতিহাসিক মেহেরগড় সভ্যতা , হরপ্পা সভ্যতা এবং বৈদিক সভ্যতাকে ভারতের নিজস্ব এক অবিচ্ছিন্ন সভ্যতার বিভিন্ন পর্ব বলে চিহ্নিত করে এদের একসঙ্গে সিন্ধু - সরস্বতী সভ্যতা নামে অভিহিত করেছেন । ১৯৭৯ সালে ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ জেন ফ্রাঁসােয়া জায়েজ  এবং তাঁর সহকর্মীরা মেহেরগড় সভ্যতার অস্তিত্বকে সর্বপ্রথম জনসমক্ষে তুলে ধরেন । | 

 

১. অবস্থান :

              পাকিস্তানের কোয়েটা শহর থেকে প্রায় ১৫০ কিলােমিটার দূরে বােলান নদীর কাছে অবস্থিত কাচ্ছি সমভূমিতে মেহেরগড় সভ্যতার মূল কেন্দ্রগুলি ছিল কিলে গুল মহম্মদ , কোট দির্জি , গুমলা , মুন্ডিক , রাণা ঘুনডাই , আনজিরা এবং মেহেরগড় । 


২.ব্যাপ্তি :

       আধুনিক ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে , বেলুচিস্তানের জোব নদী থেকে পশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদ , পূর্ব দিকে হিমালয় পর্বত ও থর মরুভূমি থেকে পশ্চিমে ইরাক , ইরাণ ও আরবের মরুভূমি এবং উত্তরে হিন্দুকুশ , কারাকোরাম , ককেশাস , এলবুর্জ প্রভৃতি পর্বতমালা থেকে দক্ষিণে মহেঞ্জোদারো  পর্যন্ত ছিল মেহেরগড় সভ্যতার বিস্তার । 
        প্রাচীনত্ব নির্ধারণের অতি আধুনিক রেডিও কার্বন -১৪ পদ্ধতি , বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ ও পুরাতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে , মেহেরগড় সভ্যতার মােট সাতটি পর্বের মধ্যে প্রথম তিনটি পর্ব নতুন প্রস্তর যুগের সমসাময়িক । এই সাতটি পর্ব থেকে মেহেরগড় সভ্যতার অধিবাসীদের ভ্রম্যমান পশুপালকের জীবন থেকে যাত্রা শুরু করে কৃষিভিত্তিক সমাজজীবনে উত্তরণের ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট ছবি পাওয়া যায় ।

 

Post a Comment

0 Comments